ঢাকা , শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালীতে সংবাদকর্মীর মোবাইল ছিনিয়ে নিলেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শিক্ষক জান্নাতুলের মৃত্যুর দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের: রিটার্নিং কর্মকর্তা সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে ঘুমনোর অভ্যেস বলিউডের ৫ তারকার চলনবিলে নৌকাবাইচ দেখতে লক্ষাধিক দর্শনার্থীর আগমন কেঁদে কেটে হাতে-পায়ে ধরি, তাও জোর করে আমাকে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে, বিস্ফোরক অক্ষয়ের নায়িকা! সরকারি চিকিৎসকদের জন্য ৮ দফা কঠোর নির্দেশনা খুলনায় বিদেশি অস্ত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক নেপালে বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১, পলাতক ১২ হাজার ৫৩৩ কয়েদি হাজীগঞ্জ গায়ে হলুদে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে বরের মৃত্যু রোজ এনার্জি ড্রিঙ্ক খেলে কেবল ডায়াবিটিস নয়, সঙ্গে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বাড়ে জাকসু নির্বাচন কমিশনার মাফরুহী সাত্তারের পদত্যাগ সুশীলা কার্কিকে নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা পদত্যাগ করলেন জাকসু নির্বাচন কমিশনার মাফরুহী সাত্তার রাশিয়ার অন্দরে ঢুকে আবার ড্রোন হামলা ইউক্রেনের নোয়াখালীতে চালের টিন কেটে ওষুধ দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি তানোরের আলোচিত কথিত কবিরাজ আটক রাণীনগরে বিদ্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ নিয়ামতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ভ্যান চালকের মৃত্যু রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী মিছিলে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় গ্রেফতার -২ প্রিয়ঙ্কা-মলাইকা-জাহ্নবীদের নির্মেদ চেহারার রহস্য ফাঁস

তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত প্রায় হাটুরে সেলুন; উধাও নাপিত

  • আপলোড সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০৭:০৩:৫০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০৭:০৩:৫০ অপরাহ্ন
তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত  প্রায় হাটুরে সেলুন; উধাও নাপিত তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত প্রায় হাটুরে সেলুন; উধাও নাপিত
রাজশাহীর তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তপ্রায় হাটুরে সেলুন। এক সময় উপজেলার গোল্লাপাড়া, কালীগঞ্জ, কৃষ্ণপুর, মুন্ডুমালা, তালন্দসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে হাটবারে হাটুরে সেলুন বসতে দেখা যেতো।কিন্ত্ত এখন কালের বিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই দৃশ্যে তেমন দেখা যায় না। মানুষ নিজেকে সুন্দর রাখতে কতো কিছুই না করে থাকে। সেই প্রাচীন কাল থেকে মানুষ নিজেকে অপরের সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে আসছে। আর পুরুষ মানুষকে সুন্দর করে তোলা যাদের কাজ তাদেরকে বলা হয়, নরসুন্দর। আমরা আঞ্চলিক ভাষায় বলে থাকি নাপিত বা শীল।

জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এক সময় কাঠের পিড়িতে বসে চুল-দাঁড়ি কাটতে গেলেও ভিড় জমিয়ে অপেক্ষা করতে হতো হাটুরে সেলুনে। নরসুন্দর বা শীলরা তাদের পায়ের হাটু দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে মানুষের চুল-দাড়ি কাটতো। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে তানোের উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পিড়িতে বসা ওই সকল হাটুরে সেলুন। আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিবর্তনে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গতিধারায় এসেছে পরিবর্তন। লেগেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। তাই আজ হাট-বাজারে কড়াই বা বটবৃক্ষের ছায়ায়, খেয়াঘাট ও ফুটপাতে কিংবা গ্রামগঞ্জের জল চৌকিতে বা ইটের ওপরে সাজানো পিড়িতে বসে নাপিতের কাছে গ্রামবাংলার মানুষের চুল দাঁড়ি কাটার সেই দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না।

এদিকে জাকজমকপূর্ণ সেলুন সংস্কৃতির ঢেউ এখন শহর থেকে গ্রামের সবখানে।এমনকি শীতাতাপনিয়ন্ত্রণ (এসি) সেলুন এখন গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে দেখা যায়। যার ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এই পেশা নির্ভর গ্রামাঞ্চলের নরসুন্দররা। তারপরও কিছু সাধারণ মানুষ আজও অবলীলায় ইটে কিংবা জল চৌকিতে বসে হাটুর কাছে এখনো মাখা পেতে দেন বলেই কয়েকজন হাটুরে নরসুন্দর বেঁচে আছেন এই প্রাচীন পেশা ধরে। তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মালার মোড়ে এখনো বাপ দাদার পেশা আজও আকড়ে ধরে আছেন এক নরসুন্দর। বহু বছর ধরে এ কাজ ধরে রেখেছেন। আগে এ পিড়িতে বসে কাজ করিয়ে ভালো মতো তাদের সংসার চললেও বর্তমানে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এ নরসুন্দরের। আধুনিকত্বের ছোঁয়া বাদ দিয়ে বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন রণজিৎ শীল ও ভুপেন শীল। চৌবাড়িয়া হাটে হঠাৎ করেই রণজিৎ শীলের এই হাটুরে সেলুন দেখে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। এসময় নরসুন্দর রণজিৎ শীল জানান, প্রায় ৪০ বছর যাবত বাপ-দাদার ঐতিহ্য পেশা ধরে রেখে পিড়িতে বসিয়ে মানুষের চুল-দাঁড়ি কামাচ্ছি। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষজন সেলুনমুখী হয়ে গেছে। মাটিতে বসে চুল-দাঁড়ি কাটতে চায়না, এখন খুব কমই মিলে। আয় রোজগার তেমন নেই। বলতে পারেন বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখেছি মাত্র।

চৌবাড়িয়া হাটের অপর এক হাটুরে নরসুন্দর কমল শীলের চুল কাটার দৃশ্য, প্রায় ৪০ বছর ধরে পিড়িতে বসিয়ে মানুষের চুল দাঁড়ি কামানোর কাজ করছেন। তিনি জানান, মাটিতে এভাবে বসে কেউ আর চুল দাঁড়ি কাটাতে চায়না, কারণ সেলুনে চেয়ারে বসে কাটতে পারে। তারপরও বাপ-দাদার পেশা ছাড়তে পারি না। তবে দিন শেষে প্রায় ৩ থেকে ৪শ" টাকা কামাতে পারি। বয়সের ভারে এখন আর তেমন কাজ করতে ইচ্ছে হয় না।

শুধু ঐতিহ্যটাকে ধরে রেখেছি। চুল দাঁড়ি কাটতে আসা  দিনমজুর তৈয়ব আলী বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর যাবত দাদার এখানে চুল দাঁড়ি কামাতে আসি। চুল দাঁড়ি কামাতে আমার বাবাও সকাল বেলা নিয়ে যেতো দাদার কাছে। পিড়িতে বসে কাটানোর অভ্যাসটি হয়তো আর ছাড়তে পারবো না। আবার টাকাও কম লাগে। চুল দাঁড়ি কাটাতে আসা ওবাইদুর নামে অপর এক শ্রমিক জানান, দীর্ঘদিন যাবত দাদার এখানে চুল দাঁড়ি কাটাই। মাত্র ৪০ টাকা দিতে হয়। আধুনিক সেলুনে কাটালে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। আয় রোজগার কম তাই এখানে চুল দাঁড়ি কাটাতে চলে আসি। পুরুষের সৌন্দর্য বর্ধন করার কৌশলগত কারণে শীলদের প্রয়োজনীয়তা ও কদর ফুরাবেনা। কিন্তু হাট বাজারে সাজানো পিড়িতে বসে চুল দাঁড়ি কাটার সেই দৃশ্য কালের বিবর্তনে হয়তো এক সময় হারিয়ে যাবে।তবে স্মৃতির পাতা থেকে নরসুন্দররা কখনো হারিয়ে যাবে না।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
তানোরের আলোচিত কথিত কবিরাজ আটক

তানোরের আলোচিত কথিত কবিরাজ আটক