ঢাকা , বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ , ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আওয়ামীলীগের লগি বৈঠার তান্ডবে নিরীহ মানুষ হত্যার বিচার দাবি মোহনপুরে জামায়াতে ইসলামী বিক্ষোভ ও সমাবেস ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজশাহীতে জামায়াতের সমাবেশ তৃতীয় ব্যক্তিকে শরীর দেওয়া যায়, মন দিলেই অন্যায়! কাজল-টুইঙ্কলের বক্তব্যে বিতর্ক ৩০ হওয়ার আগেই অবসর নেবেন ভেবেছিলেন তমন্না নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দ্রুত বডি-ওর্ন ক্যামেরা ক্রয়ের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার দুই জেলায় এস আলমের ১৪২২ বিঘা জমি জব্দের আদেশ নিয়ামতপুরে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত পত্নীতলায় দেশি বীজ বিনিময় উৎসব অনুষ্ঠিত বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে নির্বাচনি প্রচারণা, বর্ণবাদের অভিযোগ ভারতে ব্রাজিলীয় মডেলকে যৌন হয়রানি, আটক ১ শক্তি বাড়িয়ে উপকূলের আরও কাছে ঘূর্ণিঝড় মেলিসা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মরণ করা হবে হুমায়ূন আহমেদকে, জানালেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা ছড়িয়ে পড়েছে চিরঞ্জীবীর ‘নগ্ন ভিডিও’, যা জানা গেল পঞ্চগড়ে দেশীয় পিস্তল-গুলি জব্দ জামায়াত প্রার্থীর মাইক ছিনিয়ে নিলো নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা ভাতিজা চাচিকে বিয়ে করে ফেসবুকে পোস্ট খুলনায় অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটে লাথি, গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু বগুড়ায় মোটরসাইকেলে এসে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা সংঘর্ষে উল্টে গেল ট্রেনের ইঞ্জিন ও ট্রাক, নিহত ১

তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত প্রায় হাটুরে সেলুন; উধাও নাপিত

  • আপলোড সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০৭:০৩:৫০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০৭:০৩:৫০ অপরাহ্ন
তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত  প্রায় হাটুরে সেলুন; উধাও নাপিত তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত প্রায় হাটুরে সেলুন; উধাও নাপিত
রাজশাহীর তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তপ্রায় হাটুরে সেলুন। এক সময় উপজেলার গোল্লাপাড়া, কালীগঞ্জ, কৃষ্ণপুর, মুন্ডুমালা, তালন্দসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে হাটবারে হাটুরে সেলুন বসতে দেখা যেতো।কিন্ত্ত এখন কালের বিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই দৃশ্যে তেমন দেখা যায় না। মানুষ নিজেকে সুন্দর রাখতে কতো কিছুই না করে থাকে। সেই প্রাচীন কাল থেকে মানুষ নিজেকে অপরের সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে আসছে। আর পুরুষ মানুষকে সুন্দর করে তোলা যাদের কাজ তাদেরকে বলা হয়, নরসুন্দর। আমরা আঞ্চলিক ভাষায় বলে থাকি নাপিত বা শীল।

জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এক সময় কাঠের পিড়িতে বসে চুল-দাঁড়ি কাটতে গেলেও ভিড় জমিয়ে অপেক্ষা করতে হতো হাটুরে সেলুনে। নরসুন্দর বা শীলরা তাদের পায়ের হাটু দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে মানুষের চুল-দাড়ি কাটতো। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে তানোের উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পিড়িতে বসা ওই সকল হাটুরে সেলুন। আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিবর্তনে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গতিধারায় এসেছে পরিবর্তন। লেগেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। তাই আজ হাট-বাজারে কড়াই বা বটবৃক্ষের ছায়ায়, খেয়াঘাট ও ফুটপাতে কিংবা গ্রামগঞ্জের জল চৌকিতে বা ইটের ওপরে সাজানো পিড়িতে বসে নাপিতের কাছে গ্রামবাংলার মানুষের চুল দাঁড়ি কাটার সেই দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না।

এদিকে জাকজমকপূর্ণ সেলুন সংস্কৃতির ঢেউ এখন শহর থেকে গ্রামের সবখানে।এমনকি শীতাতাপনিয়ন্ত্রণ (এসি) সেলুন এখন গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে দেখা যায়। যার ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এই পেশা নির্ভর গ্রামাঞ্চলের নরসুন্দররা। তারপরও কিছু সাধারণ মানুষ আজও অবলীলায় ইটে কিংবা জল চৌকিতে বসে হাটুর কাছে এখনো মাখা পেতে দেন বলেই কয়েকজন হাটুরে নরসুন্দর বেঁচে আছেন এই প্রাচীন পেশা ধরে। তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মালার মোড়ে এখনো বাপ দাদার পেশা আজও আকড়ে ধরে আছেন এক নরসুন্দর। বহু বছর ধরে এ কাজ ধরে রেখেছেন। আগে এ পিড়িতে বসে কাজ করিয়ে ভালো মতো তাদের সংসার চললেও বর্তমানে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এ নরসুন্দরের। আধুনিকত্বের ছোঁয়া বাদ দিয়ে বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন রণজিৎ শীল ও ভুপেন শীল। চৌবাড়িয়া হাটে হঠাৎ করেই রণজিৎ শীলের এই হাটুরে সেলুন দেখে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। এসময় নরসুন্দর রণজিৎ শীল জানান, প্রায় ৪০ বছর যাবত বাপ-দাদার ঐতিহ্য পেশা ধরে রেখে পিড়িতে বসিয়ে মানুষের চুল-দাঁড়ি কামাচ্ছি। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষজন সেলুনমুখী হয়ে গেছে। মাটিতে বসে চুল-দাঁড়ি কাটতে চায়না, এখন খুব কমই মিলে। আয় রোজগার তেমন নেই। বলতে পারেন বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখেছি মাত্র।

চৌবাড়িয়া হাটের অপর এক হাটুরে নরসুন্দর কমল শীলের চুল কাটার দৃশ্য, প্রায় ৪০ বছর ধরে পিড়িতে বসিয়ে মানুষের চুল দাঁড়ি কামানোর কাজ করছেন। তিনি জানান, মাটিতে এভাবে বসে কেউ আর চুল দাঁড়ি কাটাতে চায়না, কারণ সেলুনে চেয়ারে বসে কাটতে পারে। তারপরও বাপ-দাদার পেশা ছাড়তে পারি না। তবে দিন শেষে প্রায় ৩ থেকে ৪শ" টাকা কামাতে পারি। বয়সের ভারে এখন আর তেমন কাজ করতে ইচ্ছে হয় না।

শুধু ঐতিহ্যটাকে ধরে রেখেছি। চুল দাঁড়ি কাটতে আসা  দিনমজুর তৈয়ব আলী বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর যাবত দাদার এখানে চুল দাঁড়ি কামাতে আসি। চুল দাঁড়ি কামাতে আমার বাবাও সকাল বেলা নিয়ে যেতো দাদার কাছে। পিড়িতে বসে কাটানোর অভ্যাসটি হয়তো আর ছাড়তে পারবো না। আবার টাকাও কম লাগে। চুল দাঁড়ি কাটাতে আসা ওবাইদুর নামে অপর এক শ্রমিক জানান, দীর্ঘদিন যাবত দাদার এখানে চুল দাঁড়ি কাটাই। মাত্র ৪০ টাকা দিতে হয়। আধুনিক সেলুনে কাটালে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। আয় রোজগার কম তাই এখানে চুল দাঁড়ি কাটাতে চলে আসি। পুরুষের সৌন্দর্য বর্ধন করার কৌশলগত কারণে শীলদের প্রয়োজনীয়তা ও কদর ফুরাবেনা। কিন্তু হাট বাজারে সাজানো পিড়িতে বসে চুল দাঁড়ি কাটার সেই দৃশ্য কালের বিবর্তনে হয়তো এক সময় হারিয়ে যাবে।তবে স্মৃতির পাতা থেকে নরসুন্দররা কখনো হারিয়ে যাবে না।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
হিজাব বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট: রাবিতে অধ্যাপক মামুনের শাস্তি চেয়ে মধ্যরাতে বিক্ষোভ

হিজাব বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট: রাবিতে অধ্যাপক মামুনের শাস্তি চেয়ে মধ্যরাতে বিক্ষোভ